এসো আরবী শিখি কিতাবের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ের চতুর্থ পাঠের নোট। এই নোটে হামজাহ মামদূদাহ, ইসমে জিনস এবং তারকীবের প্রাথমিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এই নোট তাদের জন্য বেশী উপকারী হবে যারা এই পাঠের আমার তৈরিকৃত ভিডিওটি দেখেছেন। ভিডিও সরাসরি ইউটিউব থেকে দেখতে নিচে ক্লিক করুন।
পাঠটি শুরুর পূর্বেঃ
এই পাঠে নতুন কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তবে এই পাঠে মূলত কয়েকটি নিয়মের চর্চা করানো হয়েছে। যে নিয়মগুলো আমরা প্রথম অধ্যায়ের চতুর্থ পাঠে পড়েছি। দ্বিতীয় অধ্যায়ের এই চতুর্থ পাঠটি পড়ার পূর্বে প্রথম অধ্যায়ের চতুর্থ পাঠের উপর তৈরিকৃত নোটটি ভালোভাবে পড়ে নিলে এই পাঠটি অনেক সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ্। নিচের লাইনে প্রথম অধ্যায়ের চতুর্থ পাঠের নোটের লিঙ্ক দেওয়া হল।
হামজায়ে মামদুদার আলোচনাঃ
ال-যুক্ত শব্দের পূর্বে যদি হামজাতুল ইসতিফহাম আসে, তাহলে ال-যুক্ত শব্দের শুরুর আলিফ এবং হামজাতুল ইসতিফহাম উভয়টি মিলে গিয়ে همزة ممدودة (হামজাহ মামদূদাহ) হয়ে যায়। অর্থাৎ, উভয়টি মিলে যবরবিশিষ্ট এমন হামযা হয় যেটিতে টান দিয়ে পড়তে হয়।
যেমন,
أ الولد صغير؟
এখানে শুরুর হামজা ও আলিফ মিলে যাবে এবং হামজাতুল ইসতিফহাম ও আলিফের বদলে শুরুতে একটি হামজাহ মামদূদাহ বসবে। উপরের বাক্যটি লেখা হবে নিচের মতো করে।
آلولد صغير؟ (শুরুর আলিফে টান দিয়ে পড়তে হবে।)
তবে একটি কথা মাথায় রাখা ভালো, এখানে হামজাহ মামদূদার নিয়মটি হামহাতুল ইসতিফহাম কিংবা ال-যুক্ত শব্দের সাথে সম্পর্কিত নয়। নিয়মটির সম্পর্ক যবরবিশিষ্ট হামজার সাথে। যবরবিশিষ্ট হামজার পরে যদি সাকিনবিশিষ্ট হামজা কিংবা আলিফ থাকে, তাহলে উভয়টি মিলে গিয়ে হামজাহ মামদূদাহ হয়ে যায়।
যেমন, أ الولد صغير؟ বাক্যে প্রথমে থাকা হামজাতুল ইসতিফহাম হচ্ছে যবরবিশিষ্ট যবরবিশিষ্ট হামজা। তারপর রয়েছে ال-যুক্ত শব্দ। প্রথম অধ্যায়ের চতুর্থ পাঠে আমরা পড়েছিলাম, ال-যুক্ত শব্দের পূর্বে অন্য কোন শব্দ না থাকলে ال-যুক্ত শব্দের শুরুর আলিফটিতে যবর দিয়ে পড়তে হয়। আর ال-যুক্ত শব্দের পূর্বে অন্য কোন শব্দ থাকলে আলিফটি উচ্চারিত হয় না, হরকতবিহীন আলিফটি থেকে যায়। তাহলে দেখতে পাচ্ছি যে, যবরবিশিষ্ট হামজার পর এখানে একটি আলিফ রয়েছে। তাই উভয়টি মিলে গিয়ে হামজাহ মামদূদাহ হয়েছে।
তারকীবের পরিচয়ঃ
বাক্যে অবস্থিত শব্দগুলোর অবস্থান বিশ্লেষণ করাকে তারকীব (تركيب) বলে।
নিচের লিংকে আমি খুব সহজ ভাষায় তুলে ধরেছি তারকিবের পরিচয় ও প্রয়োজনীয়তা। হাতে সময় থাকলে পড়ে আসতে পারেন সেই লেখাটি।
তারকিব কাকে বলে? কেন শিখবে তারকিব?
জুমলার পরিচয়ঃ
বাক্যকে আরবীতে জুমলা (جملة) বলা হয়।
বিস্তারিত সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায়, একাধিক শব্দ একত্রিত হয়ে যখন মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে, তখন তাকে জুমলা বলে।
জুমলার প্রকারভেদঃ
বিভিন্ন বিবেচনায় আরবী বাক্যগুলোকে ভাগ করা হয়ে থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে জুমলা বা বাক্যের প্রথম শব্দ বিবেচনা করা।
জুমলার প্রথম শব্দ বিবেচনায় জুমলাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
- জুমলায়ে ইসমিয়্যাহ (جملة إسمية)
- জুমলায়ে ফেয়েলিয়্যাহ (جملة فعلية)
এই দুই প্রকারের জুমলা সম্পর্কে বিস্তারিত আমরা জানব ইনশাআল্লাহ্। আপাতত শুধু এটুকু মাথায় রাখি যে, এসো আরবী শিখি কিতাবের প্রথম খণ্ডে যে বাক্যগুলো রয়েছে, সবগুলোই হচ্ছে জুমলায়ে ইসমিয়্যাহ।
জুমলায়ে ইসমিয়্যার অংশসমূহঃ
জুমলায়ে ইসমিয়্যার অংশ দুইটি। মুবতাদা ও খবর।
- جملة إسمية-এর যে অংশ সম্পর্কে কিছু বলা হয়, সে অংশকে مبتدأ (মুবতাদা) বলে।
- جملة إسمية- এর যে অংশে মুবতাদা সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে خبر (খবর) বলে।
ইসমে জিনসের পরিচয়ঃ
যে সকল শব্দ একটি প্রাণী বা একটি বস্তুকে না বুঝিয়ে একজাতীয় সকল প্রাণী বা সকল বস্তু বোঝায়, তাকে اسم جنس (ইসমে জিনস) বলে।
যেমন, বই, পাখি ইত্যাদি।
উদাহরণস্বরূপ, ‘বই মানুষের বন্ধু’ বা ‘পাখি আকাশে ওড়ে’ বলা হলে তা একটি বই বা একটি পাখিকে না বুঝিয়ে সমস্ত বই এবং সমস্ত পাখিকে বুঝায়।
ওয়াহেদ থেকে ইসমে জিনসঃ
আরবী ভাষার অধিকাংশ শব্দই সাধারণ অবস্থায় ওয়াহেদ (এক বচন) বুঝায়। ইসমে জিনস বুঝায় না।
যেমন, كتاب – একটি বই, قلم – একটি কলম।
এখন এই শব্দ দুইটিকে ইসমে জিনস বানাতে চাইলে করণীয় হচ্ছে, শব্দ দুইটির শুরুতে আলিফ-লাম যুক্ত করতে হবে।
الكتاب- বই, القلم- কলম।
অর্থাৎ, যে সকল শব্দ সাধারণ অবস্থায় একটি বুঝায়, সে সকল শব্দকে ইসমে জিনস বানাতে করণীয় হচ্ছে শব্দগুলোর শুরুতে আলিফ-লাম যুক্ত করা।
আলিফ-লামের কাজঃ
শব্দের শুরুতে আলিফ-লাম যুক্ত একাধিক কাজ করে। যার মধ্যে দুইটি কাজ সম্পর্কে আমরা এখন পর্যন্ত জেনেছি। আর তা হচ্ছেঃ
- একটি নাকেরা (অনির্দিষ্ট) শব্দকে মা’রেফা (নির্দিষ্ট) বানায়।
- একটি শব্দকে ইসমে জিনস বানায়।
একটি বাক্যে আলিফ-লাম কখন কোন কাজের জন্য এসেছে, তা ال-যুক্ত শব্দের পূর্বাপর শব্দগুলো দেখলেই বুঝা যাবে।
গঠনগতভাবে ইসমে জিনসঃ
আরবী ভাষায় কিছু শব্দ এমন রয়েছে যেগুলো সাধারণ অবস্থাতেই গঠনগতভাবে ইসমে জিনস বুঝায়। সাধারণত প্রাণী এবং ফুল-ফলের নামগুলো এমন হয়ে থাকে। নিচে এমন কয়েকটি শব্দের উদাহরণ দেওয়া হল।
ورد – গোলাপ
تمر – খেজুর
بقر – গরু
ইসমে জিনস থেকে ওয়াহেদঃ
যে সকল শব্দ গঠনগতভাবে ইসমে জিনস, সেগুলোকে ওয়াহেদ (এক বচন) বানাতে চাইলে নিয়ম হচ্ছে শব্দের শেষে একটি গোল তা যুক্ত করে দেওয়া। তাহলেই শব্দটি ওয়াহেদ বুঝাবে।
নিচে তিনটি উদাহরণ দেওয়া হল।
ورد – গোলাপ
وردة – একটি গোলাপ
تمر – খেজুর
تمرة – একটি খেজুর
بقر – গরু
بقرة – একটি গরু
ইসমে জিনস ও মুবতাদা-খবরের বিষয়গুলো ইংলিশ গ্রামারের সাহায্যে আরো সহজে বুঝতে নিচের লেখাটি পড়তে পারেন।
এসো আরবী শিখি (কম্পেয়ার) – ১-২-৪ (লেখাটি প্রকাশিত হলে লিঙ্ক যোগ করা হবে ইনশাআল্লাহ্।)
Facebook Comments