এসো আরবী শিখি কিতাবের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ের তৃতীয় পাঠের নোট। এই নোটে কয়েকটি বিশেষ প্রকারের শব্দ এবং বিশেষ প্রশ্নের একটি নির্দিষ্ট প্রকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এই নোট তাদের জন্য বেশী উপকারী হবে যারা এই পাঠের আমার তৈরিকৃত ভিডিওটি দেখেছেন। ভিডিও সরাসরি ইউটিউব থেকে দেখতে নিচে ক্লিক করুন।
كسلان শব্দের হরকতঃ
كسلان শব্দটি মেয়েদের নামের মতো। অর্থাৎ, মেয়েদের নামের শেষ হরফে যেমন তানবীন ও যের হয় না, তেমনি এই শব্দের শেষ হরফেও তানবীন ও যের হয় না।
তবে বিশেষ ক্ষেত্রে এই শব্দের শেষ হরফে যের হতে পারে। সে সম্পর্কে আমরা সামনে জানব ইনশাআল্লাহ্।
মারজা’র পরিচয়ঃ
যে নাম বা শব্দের পরিবর্তে দ্বমীর ব্যবহৃত হয়, তাকে মারজা’ (مرجع) বলে।
যেমন, রাশেদ একজন ব্যবসায়ি। সে একজন বড় ব্যবসায়ি।
এখানে দ্বিতীয় বাক্যে থাকা ‘সে’ দ্বমীরটি ‘রাশেদ’ নামের পরিবর্তে বসেছে। সুতরাং, এখানে ‘সে’ দ্বমীরের মারজা’ হচ্চে ‘রাশেদ’।
একটা বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন যে, গায়েবের দ্বমীরের যখন কোন স্থানে উল্লেখ করা হয়, তখন তার পূর্বে অবশ্যই মারজা’ উল্লেখ করতে হয়। যেন দ্বমীর দ্বারা কী উদ্দেশ্য তা পাঠক বা শ্রোতার নিকট স্পষ্ট থাকে।
মুতাকাল্লিম, হাযের ও গায়েবের পরিচয়ঃ
যিনি কথা বলেন, তাকে মুতাকাল্লিম (متكلم) বলে।
যাকে সম্বোধন করে কথা বলা হয়, তাকে হাযের (حاضر) বলে।
যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে গায়েব (غائب) বলে।
যেমন, আমি তোমাকে তার বিষয়ে সতর্ক করছি। এই বাক্যে ‘আমি’ শব্দটি মুতাকাল্লিম, ‘তোমাকে’ শব্দটি হাযের এবং ‘তার’ শব্দটি হচ্ছে গায়েব।
غير শব্দের ব্যবহারঃ
غير শব্দটি আরবী ভাষায় বিভিন্ন ধরণের শব্দের শুরুতে যুক্ত হয়ে থাকে। যুক্ত হয়ে যে শব্দের শুরুতে হয় তার বিপরীত অর্থ দান করে।
যেমন, ماهر শব্দের অর্থ ‘দক্ষ’। তার শুরুতে যখন غير শব্দটি যুক্ত হবে, তখন উভয় শব্দের অর্থাৎ غير ماهر এর অর্থ হবে ‘অদক্ষ’।
এই غير শব্দটি মুদ্বফ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং যে শব্দের শুরুতে যুক্ত হয়, সেটি হয় মুদ্বফ ইলাইহি।
মুদ্বফ হওয়ার غير শব্দের শুরুতে আলিফ-লাম যুক্ত হয় না এবং শেষে তানবীন হয় না। যে শব্দের শুরুতে غير শব্দটি যুক্ত হয়, মুদ্বফ ইলাইহি হওয়ার কারণে সে শব্দের শেষে যের দেওয়া হয়।
ام- ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের আলোচনাঃ
এসো আরবী শিখি কিতাবের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম পাঠে আমরা সাধারণ প্রশ্ন ও বিশেষ প্রশ্নের একটি প্রকার (ام-সহ বিশেষ প্রশ্ন) সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করেছি। তাই এই পাঠে সেই দুই বিষয়ের আলোচনা পুনরায় করা হবে না। বিশেষ প্রশ্নের অপর আরেকটি প্রকার ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্ন সম্পর্কে আমরা এই পাঠে প্রথমবারের মতো ধারণা লাভ করেছি। তাই এখানে শুধুমাত্র ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
এখন আমরা যারা সাধারণ প্রশ্নের গঠন ও ব্যবহার ভালোভাবে বুঝেছি, ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন বলে মনে হবে না। কেননা সাধারণ প্রশ্ন ও ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের মধ্যে একটি বিষয় ছাড়া বাকী প্রায় সকল বিষয়েই আমরা মিল দেখতে পাব। উদাহরণস্বরূপ আমরা এসো আরবী কিতাবের প্রথম খণ্ডের ৬৫ নং পৃষ্ঠার চতুর্থ থেকে সপ্তম লাইনগুলো দেখতে পারি।

এখানে আমরা দেখলাম যে, তরজমা করা এবং উত্তর প্রদানের নিয়মের ক্ষেত্রে সাধারণ প্রশ্ন ও ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। শুধুমাত্র একটি বিষয়েই এই দুই ধরণের প্রশ্নের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পাব। আর সেটি হচ্ছে, প্রশ্নবোধক বাক্যের গঠন।
সাধারণ প্রশ্ন গঠনের নিয়ম একেবারেই সহজ। একটি সাধারণ বাক্যের শুরুতে هل শব্দটি যুক্ত করে দিলেই সাধারণ প্রশ্ন গঠিত হয়ে যায়।
যেমন একটা সাধারণ বাক্য هذا قلم এর শুরুতে যদি আমরা هل শব্দটি যুক্ত করে দেই, তাহলে সাধারণ প্রশ্ন هل هذا قلم؟ গঠিত হয়ে যাবে।
ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের গঠনঃ
কিন্তু ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্ন গঠন করার নিয়মটি তুলনামূলক কঠিন। এখন সেই নিয়মটি বুঝার পূর্বে আমাদেরকে আরও একটি বিষয় বুঝতে হবে।
একটি প্রশ্নবোধক বাক্যের দুইটি অংশ থাকে।
- এমন অংশ যে অংশ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত।
- এমন অংশ যে অংশ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই, বরং নিশ্চিত হতে চাই বা জানতে চাই।
যেমন, সাহলা কি ছাত্রী?
এই বাক্যে আমরা সম্পর্কে ‘সাহলা’ সম্পর্কে নিশ্চিত। কিন্তু তার ছাত্রী হওয়া সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। তার ছাত্রী হওয়ার বিষয়টা আমরা জানতে চাই।
আরেকটা বাক্য দেখি। ছাত্রী কি সাহলা?
এই বাক্যে আমরা ‘ছাত্রী’ শব্দ সম্পর্কে নিশ্চিত। অর্থাৎ, একজন ছাত্রী আছে, সে সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত। কিন্তু সেই ছাত্রী সাহলা কিনা সেই সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। আমরা এখানে সাহলা সম্পর্কে জানতে চাই।
এখন ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে, যে অংশ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে চাই, আরবীতে সেই অংশটি শুরুতে বসবে। আর যে অংশ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত সেটি বসবে শেষে।
যেমন, সাহলা কি ছাত্রী? এখানে সাহলা সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত এবং ছাত্রী সম্পর্কে অনিশ্চিত। তাই আরবীতে ছাত্রী বসবে শুরুতে এবং সাহলা বসবে শেষে।
আরবীতে ام-ছাড়া বিশেষ প্রশ্নের বাক্যটি হবে এমন, أ تلميذة سهلة؟
পক্ষান্তরে, ছাত্রী কি সাহলা? এর আরবী হবে- أ سهلة تلميذة؟
আশা করি, দ্বিতীয় বাক্যে ‘সাহলা’ শব্দটি কেন শুরুতে বসল, সেটি বুঝতে আপনাদের কোন সমস্যা হবে না।
One response to “এসো আরবী শিখি ১-২-৩ (নোট)”
মহিলাদের নামের শেষে সাধারণত তানবীন হয়না কেন?